ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম
ইসলামের
দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।পানির অপর নাম
জীবন। সকল প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য পানির গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন
আমি পানি দিয়েই প্রাণী তৈরি করেছি। আল্লাহর অনেক নিয়ামতের মধ্যে অন্যতম নিয়ামত
হলো পানি।
সকালে খালি পেটে পানি খেলে শরীর সুস্থ থাকে এবং মন ভালো থাকে। হযরত মোহাম্মাদ
(সঃ) কিছু নিয়ম বলেছেন সেগুলো নিয়ম মেনে আমদের পানি খাওয়া সুন্নত। হযরত মোহাম্মাদ
(সঃ) কিছু সুন্নত বিষয় বলে গেছেন সেগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
পোস্ট সুচিপত্রঃ ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম
- ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম
- প্রথমে বিসমিল্লাহ্ বলে পানি পান করা
- ডান হাতে গ্লাস বা মগ ধরে পানি পান করা
- বসে পানি পান করা
- গ্লাস বা মগ অবশ্যই পরিষ্কার করে পানি পান করা
- তিন নিশ্বাসে পানি পান করা
- প্রতি নিশ্বাসে গ্লাস বা মগ মুখ থেকে সরিয়ে নাওয়া
- ধিরে ধিরে পানি পান করা
- বড় পাত্রে পান না করে ছোট পাত্রে পানি পান করা
- শেষে আলহামদুলিল্লাহ্ পাঠ করা
- ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম- শেষ কথা
ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম
অনেকেই ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে
জানতে চেয়ে থাকেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস বা মগ বিশুদ্ধ পানি পান করলে
শরীর ফ্রেশ এবং ভালো থাকে। প্রাই প্রতিটি মানুষের প্রধান
সমস্যা গ্যাসটিকের সমস্যা। সকালে পানি খেলে গ্যাসটিকের সমস্যা দূর
হয়। তাই সকালে উঠে বাসি মুখে এক গ্লাস বা মগ পানি পান করতে হবে। সকলের উচিত এই
নিয়মটি মেনে পানি পান করা।
পানির গুরুত্ব অনেক। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন তোমরা আমার নিয়ামত থেকে ভক্ষন
কর কেননা আমি তোমাদের রিজিক এর জন্য এসব দিয়েছি। রসুলুল্লাহ (সঃ) পানি পানের
বিভিন্ন নিয়ম বলেছেন সেগুলো সুন্নত আমদের আনুকরনিয়।
প্রথমে বিসমিল্লাহ্ বলে পানি পান করা
হযরত মোহাম্মাদ সঃ বলেছেন প্রত্যেকটা খাবারের শুরুতে বিসমিল্লাহ্ পড়তে হয়। ঠিক
সেই রকমই পানি পান করার শুরুতে বিসমিল্লাহ্ পড়তে হয়। কোন কিছু খাবার শুরুতে
বিসমিল্লাহ্ অর্থাৎ আল্লাহর নাম নিয়ে খাবার সুরু করলে আল্লাহ সেই খাবার
বরকত দান করেন। বিসমিল্লাহ্ বলে পানি পান করলে আল্লাহ তায়ালা পানি বিশুদ্ধ করে
দেন এবং সমস্ত রোগ ভালো করে দিন। তাই আমদের সকলের উচত হযরত মোহাম্মাদ সঃ এর
সুন্নত পালন করে পানি পান করা অর্থাৎ বিসমিল্লাহ্ বলে পানি পান অরা।
ডান হাতে গ্লাস বা মগ ধরে পানি পান করা
হযরত মোহাম্মাদ সঃ বলেছেন তোমরা কোন কিছু খাওায়ার সময় অবশ্যই ডান হাতে নিয়ে
খাবা। কেননা বাম হাতে শয়তান থাকে এবং বাম হাতে বরকত থাকে। ভাত খেতে খেতে যদি
পানি খাবার প্রয়োজন হয় তবে বান হাতে গ্লাস বা মগ ধরে তাতে ডান হাতের উল্টো দিক
লাগিয়ে পানি পান করতে হবে। মানব দেহের জন্য পানি পান করার গুরুত্ব অপরিসীম।
কেননা বেশি বেশি পানি পান করলে কিডনি ও রক্ত সতেজ থাকে। তাই আমদের উচিত
ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম মেনে পানি পান করা।
বসে পানি পান করা
পানি পান করার সময় অবশ্যই আদবের সাথে বসে পানি পান করতে হবে। কেননা আল্লাহ
তায়ালা বলেন তোমারা আমার নিয়ামত থেকে যা কিছু গ্রহণ করবে অবশ্যই বিনয়েরি সাথে
সুন্নতি নিয়ম মেনে গ্রহণ করবে। বেশি বেশি পানি পান করলে দেহে জমে থাকা বিসাক্ত
বারতি পানি গুলো ঘামের মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে আসে। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর এক
গ্লাস বা মগ পানি হাতে নিয়ে বসে খেয়ে ফেলুন। এটা টানা এক সপ্তাহ করুন দেখবেন
আপনার শরীর বিভিন্ন অসুখ দূর হয়ে গেছে। তাই আমদেরর সকলের উচিত হযরত মোহাম্মাদ
সঃ এর সুন্নত মেনে বসে পানি পান করি।
গ্লাস বা মগ অবশ্যই পরিষ্কার করে পানি পান করা
পানি পান করার সময় অবশ্যই গ্লাস বা মগ পরিষ্কার করে নিতে হবে। কেননা পরিষ্কার
পরিছন্ন ইমানের অঙ্গ। গ্লাস বা মগ অপরিস্কার থাকলে জিবানু গুলো পানির সাথে
শরীরে প্রবেস করে এবং অনেক রকমের রোগ হতে পারে। যেমনঃ ডাইরিয়া, কলেরা, আমাশয়
ইত্যাদি। পানি পান করার সময় খেয়াল রাখতে হবে পানি বিশুদ্ধ কিনা। তাই আমদের পানি
পান করার সময় অবশ্যই গ্লাস বা মগ পরিষ্কার করতে হবে।
তিন নিশ্বাসে পানি পান করা
তিন নিশ্বাসে পানি পান করা ইসলামের একটি সুন্নত এবং বৈজ্ঞানিক ভাবেও উপকারী।
হযরত মহাম্মদ সঃ তিন নিশ্বাসে পানি করতেন। এটি তার সুন্নত। যা পালন করলে সাওয়াব
মিলে। তিন নিশ্বাসে পানি পান করলে অক্সসিজেন এর অভাব হয়না। সকালে উঠে তিন
নিশ্বাসে এক গ্লাস বা মগ পানি পান করলে দেহের ভারসাম্য ঠিক থাকে।
প্রতি নিশ্বাসে গ্লাস বা মগ মুখ থেকে সরিয়ে নাওয়া
পানি পান করার সময় প্রতি নিশ্বাসে গ্লাস বা মগ থেকে মুখ সরিয়ে নিতে হবে। কেননা
মুখ সরিয়ে নিলে গ্লাস বা মগের বাইরে নিশ্বাসের সময় অক্সসিজেন গ্রহণ করা যাই। আর
গ্লাস বা মগের পানিতে মুখ থেকে বের হওয়া কার্বনডাই অক্সাইড না যুক্ত হয় তাই
পানি পান করার সময় প্রতি নিশ্বাসে গ্লাস বা মগ থেকে মুখ সরিয়ে পানি পান করতে
হবে। আর যেহেতু হযরত মোহাম্মাদ সঃ এই ভাবেই পানি পান করতেন সেহেতু আমেদেরো উচিত
এই সুন্নত মেনে পানি পান করা।
ধিরে ধিরে পানি পান করা
ধিরে ধিরে পানি পান করা সুন্নত। ধিরে ধিরে পানি পান করলে গলাই চাপ কমে। দ্রুতু
পানি পান করলে গলাই ঝাঁপ লেগে যেতে পারে, যা শ্বাসরোধের ঝুঁকি বাড়াই। ধিরে ধিরে
পান করলে এই ঝুঁকি কমে। দ্রুতু পানি পান করলে একবারে অনেক পানি ভিতরে গিয়ে
হার্টের উপর চাপ পড়ে। ধিরে পানি পান করলে হার্ট ও রক্ত সঞ্চালন সাভাবিক থাকে।
গ্লাস বা মগ ভাঙ্গা আছে কিনা তা টের পাওয়া যাই ধিরে ধিরে পানি পানি পান করলে।
দ্রুতু পানি পান করলে গ্লাস বা মগের ভাঙ্গা স্থানে মুখ লেগে মুখ কেটে
যেতে পারে।
ধিরে ধিরে পানি পান করা ইসলামের দৃষ্টিতে সুন্নত। কেননা হযরত মোহাম্মাদ সঃ ধিরে
ধিরে পানি পান করত। পানি ধিরে ধিরে শোষিত হওয়ার শরীর দীর্ঘক্ষণ হাইড্রেটেড
থাকে, ফলে ক্লান্তি কমে। তাই আমদের সকলের উচিত ধিরে ধিরে পানি পান করা।
বড় পাত্রে পান না করে ছোট পাত্রে পানি পান করা
বড় পাত্রে পানি পান করলে মুখে বেশি করে পানি প্রবেশ করতে পারে যা সরাসরি
পাকস্থলীতে চাপ পড়ে। হার্টে ও চাপ পড়ে যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। ছোট পাত্রে
পানি পান করলে পানি কম করে প্রবেশ করলে পাকস্থলীতে চাপ কম পড়ে ফলে দেহের
ভারসাম্য রক্ষা পাই। আমদের সকলের উচিত বড় পাত্রে পান না করে ছোট পাত্রে
পানি পান করা।
শেষে আলহামদুলিল্লাহ্ পাঠ করা
যেকোনো খাবার খাওয়ার শেষে আলহামদুলিল্লাহ্ পাঠ করা সুন্নত। কেননা হযরত
মোহাম্মাদ সঃ খাবার খাওয়ার পর সর্বদা আলাহামদুল্লিলাহ পাঠ করতেন। আল্লাহর
নিয়ামত ভক্ষন করার পর অবশ্যই আল্লাহর প্রশংসা করতে হবে। আর প্রশংসা করতে হবে
আলহামদুলিল্লাহ্ পাঠ করে। কথা বলে নয়। কেননা আল্লাহ সব কিছু আমদের জন্য সৃষ্টি
করেছেন। তাই সব কিছু বিনিময়ে আলাহামদুলিল্লাহ অবশ্যই পাঠ কতে হবে।
ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম- শেষ কথা
এই পোস্টে ইসলামের দৃষ্টিতে সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম
নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সকালে খালি পেটে পানি পান করলে অনেক উপকার হয়। সকালে
খালি পেটে ইসলামের পানি পানের নিয়ম মেনে পানি পান করলে মানব দেহের বিভিন্ন রোগ
থেকে মুক্তি পাওয়া যাই। হযরত মোহাম্মদ সঃ সর্বদা এই নিয়ম গুলো মেনে পানি পান
করতেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url